কলকাতা: “আমাদের ৪টে বিধায়ককে জেলে ভরে রেখেছে। চুরির জন্য বদনাম দিয়ে আমার ৪ জনকে জেলে রাখে, আমি তাহলে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি দলের পক্ষ থেকে ওদের ৮ জনকে জেলে ভরব।” কয়েকদিন আগেই নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এ কথা শোনা গিয়েছে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে। যা নিয়ে দানা বেঁধেছে বিতর্ক। রাজনৈতিক মহলে চলছে চাপানউতোর। এ মন্তব্যের পরেই কড়া প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা গিয়েছিল বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। সাফ বলেছিলেন, “এই কথা বলার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট থানায় এফআইআর হওয়া উচিত। নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়াম হেয়ার স্ট্রিট থানার মধ্যে পড়ে। ওই থানায় আমি এফআইআর করব।” এরইমধ্যে শুক্রবার রাতে পুলিশে অভিযোগ জানিয়ে ই-মেলও করেছেন শুভেন্দু। এবার এই ইস্যুতে নন্দীগ্রামের বিধায়ককে একহাত নিলেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন।
শুভেন্দুর বিরুদ্ধে কড়া আক্রমণ শানিয়ে শান্তনু বলেন, “লোডশেডিংয়ের নেতা শুভেন্দু অধিকারী যাকে গোটা পৃথিবীর লোক প্রকাশ্যে টিভির সামনে টাকা নিতে দেখল, যার নাম সিবিআইয়ের এফআইআরে রয়েছে, যিনি বিভিন্ন কেলেঙ্কারিতে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতিতে ডুবে রয়েছেন, সুদীপ্ত সেন তাঁকে কত টাকা দিয়েছেন তা কোর্টের কাছে লিখে জানিয়েছেন, তিনি গিয়েছেন জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে এফআইআর করতে। এদিকে যিনি তাঁর রাজনৈতিক জন্মদাত্রী, যাঁর জন্য তাঁর রাজনীতিতে পরিচিতি।”
শান্তনুর দাবি বিরোধীদের হিংসার রাজনীতি প্রতিহত করতে তাঁরা বারবার তৃণমূল সুপ্রিমোকে অনুরোধ করেছেন। কিন্তু, ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই মমতা বদলা নয়, বদল চাই অবস্থানেই অনড় থেকেছেন। যে কারণে শ্রী ঘরে যেতে যেতেও রক্ষা পেয়েছেন বহু বাম নেতা। শান্তনু বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসের প্রচুর কর্মী সিপিএমের হার্মাদদের হাতে খুন হয়েছেন। কিন্তু, মমতা প্রতিহিংসার রাজনীতিকে হাঁটেনি বলে আজও ১২ বছর শাসনকালে থাকার পরেও তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বেশি করে খুন হচ্ছেন। মমতা যদি বদলা নয় বদল চাই না বলতেন তাহলে বহু বামপন্থী পুরনো নেতা আজ শ্রীঘরে থাকতেন।” এখানেই না থেমে শান্তনু আরও বলেন, “আমরা পুরনো দিনের কর্মীরা মমতাকে বারবার বলেছি বিরোধীরা আপনার সৌজন্যতাকে দুর্বলতা ভাবছেন। তাই যাঁদের বিরুদ্ধে খুন বা অন্যান্য অভিযোগ রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে শ্রীঘরে ঢোকান। আমাদের অনুরোধকে মান্যতা দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ঘোষণা করায় পুরনো তৃণমূল কর্মী যাঁরা অত্যাচারের চিহ্ন বহন করছে তাঁদের শরীরে তাঁরা অত্যান্ত উল্লসিত ও আনন্দিত।”