উত্তরকাশী: গত বছর মহারাষ্ট্রে সুড়ঙ্গ ধসে মারা গিয়েছে বড় ছেলে। আর এবার সুড়ঙ্গের (Tunnel) ভিতরই আটকে রয়েছে ছোট ছেলে। সে-ই বর্তমানে পরিবারের একমাত্র রোজগেরে। বাড়িতে আছে দুই ছোট ছোট নাতি-নাতনি। তাদের মুখের দিকে তাকিয়েই বড় ছেলের মৃত্যুর পরও সর্বনাশী সুড়ঙ্গের ভিতর ছোট ছেলেকে কাজে যেতে দিয়েছিলেন বাবা-মা, কার্যত বুকে পাথর বেঁধে। কিন্তু, সেটাই কাল হল! দু-সপ্তাহ ধরে সুড়ঙ্গের ভিতরই আটকে রয়েছে ছোট ছেলে, মনজিৎ। এখন তাঁর ফিরে আসার অপেক্ষায় সিলকিয়ারা টানেলের (Silkyara tunnel) সামনেই অনন্ত অপেক্ষায় বসে রয়েছেন মনজিতের এক চোখে দৃষ্টিহীন অসহায় বৃদ্ধ বাবা।
পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থার কথা ভেবেই জেদ ধরে বৃদ্ধ বাবা, মায়ের বাধা উড়িয়ে দিয়ে সিলকিয়ারা টানেলে কাজ করতে এসেছিলেন মনজিৎ। এবার কী হবে! ছেলে ফিরে আসবে তো! এই ভেবে ঘুম উড়েছে চৌধুরীসাব ও তাঁর স্ত্রীর। তাই শরীরের সমস্যা উপেক্ষা করেই ছেলেকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে এসেছেন চৌধুরীসাব। উত্তরকাশীর পাহাড়ের প্রবল শীতে কাঁপছে তাঁর শীর্ণ শরীর। পর্যাপ্ত শীতের পোশাক নেই। তবু, কোথাও নড়তে অনড় তিনি। এক সন্তানহারা পিতার এখন একটাই জেদ, শেষ অবলম্বন, মনজিৎকে সঙ্গে নিয়েই ফিরবেন ঘরে, লখিমপুরে। রোগে ভুগে চৌধুরীসাবের একটি চোখ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আরেকটি চোখ শুধু সুস্থভাবে ছোট ছেলেকে ফেরত পাওয়ার অপেক্ষায় অনন্ত দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে সুড়ঙ্গের হাঁ-মুখের দিকে। আর কেবলই বলে চলেছেন, “একবার ফিরে আসুক, আর সুড়ঙ্গে যেতে দেব না জেদি ছেলেকে।”